গনতন্ত্র দিয়ে পাশ্চাত্যের উন্নতি হলেও মুসলীমদের হচ্ছে না কেন?
বিসমিল্লাহীর রাহমানীর রাহীম
অর্থ;কোন মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর জন্য এ অবকাশ নেই যে , আল্লাহ ও রাসুলের ফয়সালার পর নিজেরা কোন সিদ্ধান্ত নিবে। আর যারা আল্লাহ ও তার
রাসুলেকে অমান্য করবে তারা প্রকাশ্যে পথভ্রস্টতায় পতিত হবে।
সূরা আহযাব আয়াত ৩৬
অর্থ; না কখনোই না, আপনার রবের কসম, তারা মুমিন হতে পারবেনা যে পর্যন্ত না তারা তাদের মধ্যকার বিবাদের ফায়সালা আপনার উপর অর্পন করবে,
তার পর আপনার সিদ্ধান্ত নির্দ্বাধায় মেনে নিবে এবং সে ব্যাপারে নিজেদের মনে কোনরুপ দ্বিধা-সংকোচ বোধ করবেনা।
সুর নিসা আয়াত ৬৫
পাশ্চাত্য জগত গণতন্ত্র দিয়ে জাগতিক কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করছে দেখে অনেক মুসলীম ব্যাস্ত হইয়ে পড়েন সেই গণতন্ত্র মুসলীম ভূখন্ডগুলোতেও আমদানী করার জন্য
আর পরা শক্তি তো রেডি হইয়ে আছে তাদের রেডিমেড গণতান্ত্রিক প্রোডাক্ট মুসলীম দেশগুলোকে গেলাবার জন্য।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৪৩ বছর পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে এই জাতি সামরিক শাসন, স্বৈরতান্ত্রিক শাসন, তত্বাবধায়ক শাসন, এবং গণতান্ত্রিক শাসন দেখেছে
সময় কাল হিসেবে গণতান্ত্রিক শাসনই বেশি কাল এ জাতি দেখেছে এবং এখনো দেখছে।
সময়ে সময়ে গণতন্ত্র থেকে জাতীয় নেত্রিগণ বিচ্যুত হলে দাদারা আমাদেরকে নছিহত করে আবারো গণতান্ত্রিক পথে নিয়ে আসতে কছুর করেননা কখনো।
গণতান্ত্রিক জুলুম আর নিপীড়নে অতিষ্ঠ হইয়ে জনগ্ণ বিকল্প কিছু চিন্তা করতে গেলে সাথে সাথে দাদারা তড়িত শক্তি প্রয়োগ করে জাতিকে এমন বিকল্প
পথ দেখান, নিপীড়ন থেকেও অধিকতর নিপীড়নের এমন দু;স্বপ্নময় পাশবিকতার সম্মুখিন করেন,যার পর অসহায় জনগ্ণ হাত পা ছেড়ে দিয়ে 'ভিক্ষা চাইনা মা
কুত্তা সামলাও' বলতে বাধ্য হন। এর পর আবারো ফিরে আসে সেই চিরচেনা গনতন্ত্র এবং তার দুর্বিত্ত রাজনীতিবিদদের সর্বময় কর্তত্বের অন্ধকার যুগ।
এভাবে চলতে চলতে যখন এক সময় দুর্নীতি-অপরাধ সীমা ছাড়িয়ে যায়, দাদারা তখন আমাদের রাজনীতিবিদদের আরো গনতান্ত্রিক হওয়ার পরামর্শ দেন।
ফলে রাজনীতিবীদরা আরো গনতান্ত্রিক হন এবং তার সাথে তাল মিলিয়ে দুর্নীতি ও লুটপাট ও চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে। জনগনের দু;স্বপ্নের সেই অন্ধকার
রাত আর শেষ হয় না।
শধু বাংলাদেশ না গনতান্ত্রিক ও মানবরচিত অন্যান্য শাসন পদ্ধতির দ্বারা পরীচালিত দুনিয়ার সবগুলো মুসলীম ভূখন্ডের এই একই অবস্থা। কিন্তু কেন
গনতন্ত্র দিয়ে পাশ্চাত্য জাগতিক কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করতে পারলেও মুস্লীম দেশগুলোর তার বিপরীত চিত্র কেন।
এই প্রশ্নর উত্তর রইয়েছে এক সহজ উধারনের মধ্যে।তা হলো,
যে কোন মেশিনারীজ তথা 'হার্ডওয়াড' যন্ত্র সুচারুরুপে চালাতে হলে তার জন্য সেই সফটওয়্যারই গ্রহণ করতে হয়,যা 'হার্ডওয়াড' প্রস্তুতকারী ব্যক্তি বা
প্রতিষ্ঠান তার মেশিনটি চালানোন জন্য যেই সফটওয়্যার নির্ধারণ করেছে সেটিই তার জন্য একমাত্র উপযুক্ত/ এর বাইরে অন্য যত কিছুই ভাল দেয়া হোক না
কেন, তা তার জন্য উপকারী তো নয়ই;বরং ক্ষতিকারক হবে। ধরুন আপনি ইন্টারনেট মডেম কিনলেন কিউবি আর সফটওয়্যার নিলেন গ্রামীণের।
এক কোম্পানির মডেম আরেক কোম্পানীর সফটওয়্যার , এখন অবস্থা কি হবে তাই এক বার চিন্তা করুন।
একই ভাবে একটি জাতি বা সমপ্রদায়ের সামষ্টীক সফলতা ও অগ্রগতি নির্ভর করে তার আকীদা বিশ্বাসের আলোকে গৃহীত কর্মপদ্ধতি অনুযায়ি পরিচালীত
হওয়ার মাধ্যমে। মানে একটি জাতি তখনি উন্নতি করতে পারে । যখন তারা তাদের বিশ্বাস থেকে উতসারিত জীবন ব্যবস্থা দ্বারা পরিচালীত হবে।
এ কারোনেই আজকের পাশ্চাত্য ও অমুসলীম বিশ্ব যখন সেক্যুলার কুফরী আকীদা গ্রহন করেছে এবং সেই কুফরী আকীদা হতে উতসারীত মানুষের স্বার্বভৌমত্ব
ও কর্তৃত্বকে সামনে নিয়ে 'জীবন তো একটাই' শ্লোগানে ভোগসর্বস্ব নীতিতে চলা আরম্ভ করেছে এবং ভোগ ও চাহিদার অবাধ যোগান ও নিশ্চিত করার জন্য
গনতান্ত্রিক জীবন ব্যাবস্থা প্রবর্তন করে সেই আলোকে পথ চলা শুরু করেছে তখন তাদের আকীদা ও জীবন ব্যাবস্থা পরস্পর অনুরুপ হওয়ায় তারা
জাগতিক কিছু ক্ষেত্রে সাফল্য পাচ্ছে। আর কাফিরদেরকে জাগতিক ক্ষেত্রে উন্নতি দেয়ার কথা আল্লাহ কুরআনে বলেছে,
অপর দিকে যারা মুসলীম , মহান আল্লাহকে রব এবং ইলাহ হিসেবে মেনে নিয়ে মুমিন হয়েছে, কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট পরিচালনার জন্য মহান আল্লাহর দেয়া
জীবন ব্যাবস্থা ইসলামকে বাদ দিয়ে , গনতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজ তন্ত্র, কিংবা অন্য কোন মানব রচিত ব্যবস্থার আশ্রয় নিয়েছে, আখেরাতে তো নয়ই এমনকি
এই দুনিয়াতেও তারা কোন ভাবে সফলতা লাভ করতে পারবেনা। কেননা, তারা যতই চেষ্টা করুকনা কেন। তাদের আকীদা বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক ঐ সকল
ব্যবস্থা তাদের সমাজ ও রাষ্টে শান্তির পরিবর্তে অশান্তিই বৃদ্ধি করবে। আর পর কালে শাস্তি তো আছেই।
আল্লাহ এবং তার রাসুল কে বিশ্বাস করে মুমিন হওয়ার পর প্রতিটি মুমিনের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য হচ্ছে নিজেদের মধ্যকার যে কোন ব্যাপারে কুরআন
সুন্নাহকে সমাধান ও ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহন করা যা প্রথমে আয়াতে বর্ণীত হয়েছে
তাই মুসলীম উম্মাহ যদি ইহকাল ও পরকালের সার্বিক কল্যান চায় তাহলে তাকে দুনিয়ার এই জীবনে মহান আল্লাহর দেয়া জীবনব্যবস্থা ইসলামকেই পুর্ণাংগরুপে
গ্রহণ করতে হবে।
আর যদি শুধু ইহকালে গনতন্ত্র ও অন্যান্য অনৈসলামিক , মানব রচিত হারাম ব্যবস্থা দ্বারা পার্থিব কল্যাণ চায় ,তাহলে ইসলাম ত্যাগ করতে হবে।
এবার আসুন আমরা ভেবে দেখি কোন পথ গ্রহণ করবো।
Created at 2015-03-22 03:08:02
Back to posts
UNDER MAINTENANCE